বর্তমানে বিভিন্ন ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান গুলো পার্সোনাল লোণের অনেক গুলো বিকল্প ব্যবস্থা রেখেছে। যদিও পার্সোনাল লোন পাওয়ার যোগ্যতার মানদণ্ড বিভিন্ন ব্যাংকে বিভিন্ন রকম তবে মূল কিছু নির্দেশনা মোটামুটি একই যা সব ঋণদাতা ব্যাংকগুলোই মেনে চলে লোন পাশ করার সময়। পার্সোনাল লোন আবেদনের সময় মূল যে মানদণ্ড অনুসারে একজনের যোগ্যতা পরিমাপ করা হয় তা হল বয়স, পেশা, বাৎসরিক ইনকাম, ব্যাংকিং লেনেদেনের ইতিহাস এবং তার বকেয়া ঋণ।
বয়সের মানদণ্ড: বেশিরভাগ ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্টান গুলোর একটি সাধারণ নির্দেশনা হ’ল একজন বেতনভোগী ব্যক্তিকে ব্যক্তিগত ঋণ গ্রহণের জন্য ২১ থেকে ৬০ বছর বয়সের মধ্যে হতে হবে এবং একজন স্বনির্ভর চাকুরীজীবির ক্ষেত্রে ব্যক্তির বয়স ২৫ থেকে ৬৫ বছরের মধ্যে হতে হবে।
কর্মসংস্থান স্থিতিশীলতা: একজন বেতনভুক্ত ব্যক্তি কমপক্ষে ২ বছর পেশাদারী চাকুরী অথবা নুন্যতম ১ বছর বর্তমান প্রতিষ্ঠানে কর্মরত থাকতে হবে এবং একজন স্বনির্ভর চাকুরীজীবির ক্ষেত্রে তার কমপক্ষে ৫ বছর আয়ের ইতিহাস এবং বর্তমান পেশায় সর্বনিম্ন ২ বছরের সময় অতিক্রান্ত হতে হবে পার্সোনাল লোনের যোগ্য হতে। তবে এই মানদণ্ড ঋণদানকারীর সিদ্ধান্ত ও অন্যান্য উপাদানের উপর নির্ভর করে এই কিছুটা নমনীয়।
আর্থিক পরিস্থিতি: ব্যক্তিগত ঋণ অনুমোদনের সময় একজন ব্যক্তির বর্তমান এবং পূর্ববর্তী আর্থিক অবস্থা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিবেচ্য বিষয়। ব্যক্তিগত ঋণের আবেদনের জন্য বিভিন্ন ব্যাংক আয়ের সর্বনিম্ন সীমা সুনির্দিষ্ট করে দিয়েছে। যেহেতু আর্থিক অবস্থা যেকোন ব্যক্তিটির ঋণ পরিশোধের ক্ষমতা নির্ধারণ করে এবং তাই ঋণদানকারীরা যাতে অনিরাপদ ব্যক্তিগত ঋন দেওয়ার সময় এই দিকটি সর্বাধিক বিবেচনায় নেয়। একজন ব্যক্তি কত টাকা লোন পাবে তাও এই মানদণ্ডের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
ক্রেডিট রেটিং: আবেদনকারীর লেনদেনের ইতিহাস হ’ল আরেকটি বিষয় যা ঋণদাতারা ব্যক্তিগত লোন অনুমোদনের সময় অনুসন্ধান করে। অন্যান্য ঋণ বা ক্রেডিট কার্ডের বকেয়া, ইএমআই প্রদানে বিলম্ব এবং খেলাপি হয়েছে এমন কিছু বিষয় যা ব্যাংক ও অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলির ব্যক্তিগত ঋন প্রাপ্তির যোগ্যতা হ্রাস করতে পারে। অন্যদিকে একটি ভাল ক্রেডিট রেটিং বা লেনদেনের ইতিহাস আছে এমন ব্যক্তির লোন পাওয়া যোগ্যতা অনেক বেড়ে যায়।
নিয়োগকর্তা: যেহেতু ঋণ সবসময়ই একটি অনিরাপদ প্রক্রিয়া হওয়ায় আবেদনকারী যে ধরণের নিয়োগকর্তার অধীনে কাজ করছেন তা ব্যক্তিগত ঋণের জন্য যোগ্যতার সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় যথেষ্ট গুরুত্ব দেওয়া হয়। সরকারী খাতের কর্মচারীরা, নামী এবং প্রতিষ্ঠিত বেসরকারী সংস্থাগুলিতে যারা কাজ করছেন তাদের আয়ের ক্ষেত্রে স্থিতিশীলতা থাকায় অন্যের তুলনায় ব্যক্তিগত ঋন পাওয়ার ক্ষেত্রে তারা বেশি উপযুক্ত।
বকেয়া ঋণের দায়বদ্ধতা: ব্যক্তিগত ঋণের জন্য আবেদনের সময় আবেদনকারীর অন্য কোনও বকেয়া ঋণ থাকলে তার ব্যক্তিগত ঋণের সর্বোচ্চ পরিমাণ টাকা পাওয়ার সম্ভবনা কমে যায়। যেহেতু ইএমআই অনুযায়ী লোনের পরিমাণ হিসেব করা হয় তাই আবেদনকারীর অন্য কোথাও বকেয়া ঋণ থাকলে তার ব্যক্তিগত ঋণের পরিমাণ অনেক কমে যায়।
তবে ব্যক্তিগত ঋণের ক্ষেত্রে স্থানীয় শাখা ব্যবস্থাপককে যথেষ্ট বিবেচনাপ্রসূত ক্ষমতা দেওয়া হয় যা তিনি আবেদনকারীর যোগ্যতার মানদণ্ডের সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও ঋণ অনুমোদনের জন্য ব্যবহার করতে পারেন। ব্যক্তিগত ঋণের জন্য শাখা ব্যবস্থাপকের সাথে আলোচনার সময় গ্রাহককে সর্বদা সেরা সম্ভাব্য ডিলের দরদাম করার চেষ্টা করতে হবে।