বর্তমানে আর্থিক প্রতিষ্ঠান গুলো প্রতিযোগিতা করে বিভিন্ন ধরনের কাস্টমারদের কথা মাথায় রেখে যে অজস্র লোন প্রোডাক্ট বাজারে ছাড়ছে তারমধ্যে যেসব পার্সোনাল লোনের যে ক্যাটেগরি তা আসলেই অনেক বড় এবং জটিল। আপনার চাহিদা পুরণে সাহায্য করবে এবং আপনার সাথে মানানসই এরকম একটা লোন নির্বাচন করা আসলেই একটি দূরহ কাজ। এখানে আমরা বর্তমান বাজারে লোন সংক্রান্ত যেসব পণ্য আছে সেগুলোর কিছু নির্দেশনা, মানদণ্ড ও তুলনামূলক পার্থক্য তুলে ধরব যা আপনাকে আপনার পছন্দসই পণ্য বেছে নিতে বা মূল্যায়ন সাহায্য করবে।
সুদের হার: এটি এমন প্রাথমিক একটি উপাদান যা কোন ব্যক্তিগত লোন গ্রহণের সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করে। বর্তমানে যেসব লোন প্রোডাক্ট ব্যাংকগুলোতে আছে সেগুলোর মধ্যে সুদের বিস্তর পার্থক্য রয়েছে। তার আপনার প্রয়োজনে অনলাইন থেকে ইন্টারেস্ট রেটের একটা তালিকা সংগ্রহ করে তুলনা মূলক একটা ধারনা পেতে পারেন। এছাড়াও ব্যাংকগুলো তাদের জনপ্রিয়তা ও প্রচারণার জন্য বছরের বিভিন্ন সময়ে কিছু কিছু লোন অফারের বিজ্ঞাপন দিয়ে থাকে। ঐ সময়ে এ জাতীয় অফারগুলোকে কাজে লাগিয়ে কম সুদের লোন নিতে পারাটা বুদ্ধিমানের কাজ। আর ঐ লোনকৃত টাকা প্রদত্ত মেয়াদান্তে ফেরত দিতে পারলে উল্লেখযোগ্যভাবে আর্থিকভাবে লাভবান হতে পারেন।
ঋন পরিশোধের মেয়াদ ও ইএমআই: এই দুটি মানদণ্ড একে অপরের সাথে সংযুক্ত কারণ এটির একটি বৃদ্ধির ফলে অন্যটি হ্রাস পেতে পারে। ব্যাংকগুলি আপনার মাসিক বাজেট ও পরিকল্পনা মাফিক আরও বাস্তবসম্মত এবং সুবিধাজনক ইএমআই প্রস্তাব করে যেগুলোর মাধ্যমে আপনি সর্বাধিক সময়সীমার মধ্যে ঋণ পরিশোধ করতে পারেন ফলে এটা আপনার কাছে আর বোঝা মনে হবে না। যা হোক আপনাকে সাবধানে এই ব্যক্তিগত ঋণের মেয়াদ ঠিক করে নিতে হবে ঋন পরিশোধের মেয়াদ যত দীর্ঘ হবে এর ইন্টারেস্ট রেট ও বেশি হতে পারে অথবা আপনাকে মেয়াদান্তে অতিরিক্ত সুদ বহন করতে হতে পারে। এমন কি সুদের হার একই হলেও দেখা যাচ্ছে মেয়াদ অতিক্রান্ত সময়ে ব্যাংককে পরিশোধিত অর্থের পরিমাণ অনেক। যার কারণে উচ্চ সুদের হার ও দীর্ঘমেয়াদী ঋণ সাধারণত আপনার গৃহীত অর্থের পরিমাণকে কয়েকগুণ করে যা একজন ঋণগ্রহীতার জন্য খুবই অযৌক্তিক এবং অমানবিক। এসব ক্ষেত্রে বিভিন্ন মেয়াদান্তে ব্যাংক কে প্রদত্ত অর্থের পরিমানের একটা তুলনামূলক চিত্র দেখলেই অনুধাবন করতে পারবেন কিভাবে এই প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন মেয়াদী ঋন অতিরিক্ত ব্যয় বহন করে।
যোগ্যতার মানদণ্ড: এই মানদণ্ডটি উপেক্ষা করার কোনো অবকাশ নেই। কারণ আবেদনকারী ব্যক্তি কোনো নির্দিষ্ট ব্যাংকে থেকে তার সেই কাঙ্ক্ষিত লোন পাবে কি পাবে না তা নির্ধারন করে। সকল ব্যাংকেরই নিজ্বস আলাদা আলাদা মানদণ্ড রয়েছে। স্থানীয় শাখা পরিচালকদের (ব্রাঞ্চ ম্যানেজার) অতিরিক্ত বিবেচনাধীন ক্ষমতার উপর ভিত্তি করে কিছু কিছু প্রয়োজনীয়তা বিলোপ করা হয়েছে। সুতরাং ব্যাংকগুলোতে ব্যক্তিগত ঋণের জন্য আবেদনের সময় এ জাতীয় সকল বিষয়ে ধারনা লাভ করা একটাও বড় ব্যাপার।
অনুমোদনের সময়: জরুরী অর্থের প্রয়োজন হলে পার্সোনাল লোনের উপরই বেশির ভাগ ক্ষেত্রে নির্ভর করতে হয়। তাই এর অনুমোনের সময়টি একটি গুরুত্বপুর্ন মানদণ্ড যা লোনের সামগ্রিক বিশিষ্টকে প্রভাবিত করে। কিছু কিছু ব্যাংক আছে যারা কাগজপত্র সব ঠিক থাকলে এক-দুই দিনেই পার্সোনাল লনের অনুমোদন দিয়ে দেয় এবং টাকা ছাড় দেয়। এটা ও একটা মূল্যবান উপাদান যা এসব লোন গ্রহণের ক্ষেত্রে সহায়ক হয়।
উপরে উল্লেখিত এসব মানদণ্ডগুলো তুলনামূলক বিশ্লেষণ আপানকে পার্সোনাল লোন পণ্য সম্পর্কে একটা ভালো ধারনা দিবে এবং আপনার পছন্দসই বেছে নিতে সাহায্য করবে।