ব্যক্তিগত ঋণের সুবিধা এবং অসুবিধা গুলো জেনে নিন
একজন মানুষ কেন ব্যক্তিগত ঋণ নেয়? এর উত্তর অবশ্য একেকজনের কাছে একেক রকম। প্রত্যেকেই হয়তো তার বিভিন্ন আর্থিক প্রয়োজন মেটানোর জন্য ব্যক্তিগত ঋণ নিয়ে থাকেন। আপনার যদি হঠাৎ টাকার দরকার হয় এবং ক্রেডিট কার্ড ছাড়া আপনার কোনও অর্থের উৎস না থাকে যেগুলো থেকে আপনি বাড়তি টাকা পাবেন, তাহলে আপনি ব্যক্তিগত ঋণ এর দিকে পাঠাতে পারেন। কারণ ক্রেডিট কার্ড থেকে টাকা উত্তোলন করলে ব্যক্তিগত ঋণের থেকে অনেক বেশি সুদ দিতে হবে। কিন্তু আপনার যদি অন্য কোন সম্পত্তি থেকে থাকে তাহলে তা বন্দক রেখে যদি ঋণ নেন, তবে ব্যক্তিগত ঋণ এর চেয়ে কম সুদে ঋণ পাবেন।
তবে আপনার যদি দ্রুত টাকার দরকার হয় এবং কাগজপত্রের ঝামেলা মেটাতে অনেক সময় চলে যেতে পারে বলে ধারণা করেন তাহলে আপনি ব্যক্তিগত ঋণের জন্য আবেদন করতে পারেন। কারণ ব্যক্তিগত ঋণ অনেক কম সময়ে অনুমোদন হতে পারে। এমনকি আপনি আবেদন করার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ব্যক্তিগত ঋণ আপনি পেয়ে যেতে পারেন। ব্যক্তিগত ঋণ নেয়া অনেক সহজ হলেও তা আবেদন করার আগে এর সুবিধা এবং অসুবিধা গুলো জেনে তার পরে সিদ্ধান্ত নিন।
সুবিধাসমূহ: ব্যক্তিগত ঋণ এর অনেকগুলো সুবিধা আছে। আসল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি সুবিধা আমরা শুরুতে জেনে নেই।
ব্যবহারের সুবিধা: ব্যক্তিগত ঋণ আপনার যে কোন ব্যক্তিগত প্রয়োজনে ব্যবহার করতে পারেন। এটি হতে পারে আপনার যাতায়াতের খরচ, হতে পারে চিকিৎসা খরচ, হতে পারে নতুন গয়না কেনার খরচ অথবা বাড়ি ভাগাড়ের মেরামতের খরচ।
দ্রুত প্রাপ্তি: ব্যক্তিগত ঋণ সাধারনত খুব দ্রুতই পাওয়া যায়। কোন কোন ক্ষেত্রে আবেদনের 24 ঘন্টার মধ্যে এই ঋণের অনুমোদন হয়ে যায়। আপনার যদি দ্রুত টাকার প্রয়োজন হয় তাহলে আপনার অন্য কোন উপায় না থাকলে ব্যক্তিগত ঋণ সর্বশ্রেষ্ঠ পন্থা।
কাগজপত্রের ঝামেলা কম: সাধারোনত ব্যক্তিগত ঋণের ক্ষেত্রে বাড়ি ঋণ বা গাড়ি ঋণের মত খুব বেশি কাগজপত্রের প্রয়োজন হয় না। এই কারণে ব্যক্তিগত ঋণ অনুমোদন তাড়াতাড়ি হয়।
কোন জামানত বা নিরাপত্তার প্রয়োজন নেই: ব্যক্তিগত ঋণের যেহেতু সময়কাল বাড়ি বা গাড়ি ঋণের থেকে অনেক কম। যেহেতু এই ঋণের আপনার কোন ধরনের জামানত বা নিরাপত্তার প্রয়োজন নেই তাই ঋণদাতা জন্য এটি অনিরাপদ হলেও, আপনি যদি ঋণের টাকা ফেরত না দিতে পারেন তবুও আপনার সম্পদ এই ঋণ থেকে নিরাপদ থাকবে। সেই কারণে সুদের হার বেশি হল যাদের কোনো সম্পদ নেই তাদের জন্য ব্যক্তিগত ঋণ অনেক আকর্ষণীয়।
অসুবিধাসমূহ: ব্যক্তিগত ঋণ এর অনেকগুলো সুবিধা থাকলেও এর বেশ কিছু অসুবিধা রয়েছে। এখানে কয়েকটি উল্লেখ করার মতো অসুবিধা আমরা তুলে ধরছি।
চড়া সুদের হার: যেহেতু ব্যক্তিগত ঋণে আপনার কোন ধরনের জমানোর বা নিরাপত্তা দরকার হয়না তাই ঋণদাতার কাছে এটি অনিরাপদ ঋণ। সেই কারণে ঋণদাতা ব্যক্তিগত ঋণের ক্ষেত্রে অনেক চড়া সুদের হার নির্ধারণ করে থাকেন।
কোনো পার্ট পেমেন্ট নেই: বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত ঋণ দাতা কোন পার্টি পেমেন্ট অনুমোদন দেয় না। সে ক্ষেত্রে আপনার পুরো ঋণের মেয়াদ কাল পর্যন্ত আপনাকে ঋণের টাকা পরিশোধ করতে হবে। এটি বেশ ব্যয়বহুল হয়ে থাকে, কারণ প্রথমদিকে আপনি যে টাকাগুলো দিবেন তা আপনার সুদের হার অনুযায়ী সুদের টাকাই কমতে থাকবে।
ভালো ক্রেডিট রেটিং দরকার: যারা বাংলাদেশের বাইরে রয়েছেন তাদের জন্য ব্যক্তিগত ঋণের ক্ষেত্রে ভালো ক্রেডিট রেটিং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আপনার ক্রেডিট রেটিং কম থাকলে আপনার সুদের হার বাড়িয়ে দিতে পারে এমনকি আপনার ঋণের আবেদন নাকচও করে দিতে পারে।
এরপরেও কি আপনি ব্যক্তিগত ঋণের জন্য চেষ্টা করবেন?
আসলে প্রত্যেকের উত্তর তাদের পারিপার্শ্বিক অবস্থার ভিত্তিতে নির্ভর করে। আপনার যদি হঠাৎ টাকার প্রয়োজন হয়, এবং ক্রেডিট কার্ড ছাড়া আপনার যদি অন্য কোন দ্রুত টাকা বের করার উপায় না থাকে তখন আপনি ব্যক্তিগত দিনের কথা চিন্তা করতে পারেন। কারণ ক্রেডিট কার্ড থেকে টাকা উত্তোলন করলে ব্যক্তিগত ঋণ এর থেকেও অনেক বেশি পরিমাণ আপনাকে ফেরত দিতে হবে। তাই আপনার যদি অন্য কোন সম্পদ থেকে থাকে, তাহলে সেগুলো বন্ধক রেখে প্রয়োজনে ঋণ নিন, তাহলে তুলনামূলক সুদের হার ব্যক্তিগত ঋণ থেকে কম থাকবে।
সবশেষে আমরা বলতে চাই যে আপনি যখন ব্যক্তিগত ঋণ নেবে তখন তা একান্ত প্রয়োজন ছাড়া যেন আজে বাজে খরচের জন্যে ব্যবহার না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখবেন। এছাড়াও ব্যক্তিগত ঋণ আবেদন করার আগে সুবিধা ও অসুবিধাগুলো পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবার জন্যে অনুরোধ করছি।