এই আর্টিকেলে আমরা উঠতি বয়সী তরুণীদের জন্য আর্থিক উপদেশ নিয়ে হাজির হয়েছি যা তাদের সারা জীবন কাজে লাগবে। কিভাবে দুঃসময়ের জন্য টাকা জমাতে হয়, বাজেট কিভাবে কাজ করে এবং কিভাবে টাকা পয়সা বাড়ানো যায় এই আর্টিকেলে আমরা তুলে ধরেছি।
প্রত্যেক তরুণেরই বড় হওয়ার আগেই প্রাথমিক আর্থিক জ্ঞান অর্জন করা উচিত। আপনার সন্তান যদি পকেট মানি পায়, টিউশন করে টাকা উপার্জন করে অথবা খন্ডকালীন কাজ করে তাহলে তারা কিছুটা হলো স্বাধীনতার স্বাদ পাবে। যদিও এটি আপনার সন্তানের সামগ্রিক বেড়ে ওঠা এবং উন্নতির জন্য সহায়ক তারপরেও আগে থেকে আর্থিক ব্যবস্থাপনা বিষয়ে জ্ঞান থাকা জরুরী।
দুঃখজনক হলেও সত্যি যে খুব কম সংখ্যক ছেলে মেয়ে দীর্ঘমেয়াদী সঞ্চয় এর সুবিধা এবং ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের সুবিধা অসুবিধার কথা জানে।
বাজেট এবং সঞ্চয় এর ধারণা ছোটবেলায় পেলে তা সারা জীবন কাজে লাগবে। এখানে আমরা কয়েকটি অভ্যাসের কথা বলব ছোটবেলা থেকে যেগুলি ছেলেমেয়েদের সেখালে ভবিষ্যতে এগুলি আর্থিক ব্যবস্থাপনা শক্ত ভিত গড়ে তুলবে।
চাহিদা এবং প্রয়োজনের পার্থক্য করতে শিখা
চাহিদা এবং প্রয়োজনের পার্থক্য করতে গিয়ে অনেক প্রাপ্তবয়স্ক মানুষও ভুল করে বসেন। ব্যক্তিগত আর্থিক ব্যবস্থাপনার হিসেবে সবার আগে ছেলেমেয়েদের টাকার মূল্য শেখানো দরকার। যখন তারা টাকার মূল্য দিতে শিখবে, তখন তাদের জন্য চাহিদা এবং প্রয়োজনের পার্থক্য করতে সুবিধা হবে। পরবর্তীতে যখন প্রয়োজনীয় খরচ এবং চাহিদার জন্য টাকা খরচ করতে হবে তখন তারা হিসেব করে খরচ করতে পারবে।
ছেলেমেয়েদের ক্ষেত্রে প্রয়োজন হচ্ছে খাবার, থাকার জায়গা, সাধারণ কাপড় চোপড়, পড়াশোনা জন্য দরকারি খরচ আর চাহিদা হচ্ছে নিত্য প্রয়োজনের বাইরের যেকোনও খরচ। উদাহরন হিসাবে আপনি আপনার সংসারের বাজেট তাদেরকে দেখাতে পারেন যেখানে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস বাজেটের উপরের দিকে জায়গা করে নেয় এবং অন্যান্য চাহিদা বাজেটের শেষের দিকে থাকে।
আপনি যদি একজন তরুণ হিসেবে এই আর্টিকেলটি পড়তে থাকেন, তাহলে আপনার হাতে পাওয়া টাকাগুলো খরচ করার ব্যাপারে হিসেব করে খরচ করা উচিত। যেমন কোন কিছু কেনার আগে আপনি নিজেকে জিজ্ঞাসা করতে পারেন যে এই জিনিসটি কি আমার প্রয়োজন না আমার চাহিদা? এটা কি আমি অন্য জায়গায় কম টাকায় কিনতে পারি? আমি কি এই টাকা অন্য কোনো প্রয়োজনে ব্যবহার করতে পারি?
কেন সঞ্চয়ের অভ্যাস গড়ে তোলা উচিত?
আদর্শগতভাবে, প্রত্যেক তরুণের একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা প্রতিনিয়ত আলাদা করে সরিয়ে রাখা উচিত। টাকার পরিমাণ অনেক কম হলেও তাতে কিছু যায় আসে না। আমাদের দেশে বিভিন্ন উৎসবের সময় ছেলেমেয়েরা যে টাকা উপহার হিসেবে পায় তাও এই হিসাব থেকে বাদ যাবে না। শুরুতে তারা তাদের সঞ্চয়ী একাউন্টে টাকা গুলো জমা করতে পারে। একটা সময় পরে দেখা যাবে এই অল্প অল্প করে জমানো টাকা বড় একটা অংক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
শুরুতে ঠিক করে নিন যে আপনি কি জন্য টাকা জমাচ্ছেন। আপনার লক্ষ্য যদি বড় থাকে তারপরেও ছোট করে শুরু করতে কোন দোষ নেই। কিন্তু আপনার যদি লক্ষ্য ছোট থাকে তাহলে সেই লক্ষ্য পূরণ করার পরে আপনার আত্মবিশ্বাস বেড়ে যাবে এবং ভবিষ্যতে আরও বড় আর্থিক লক্ষ্য অর্জনের দিকে আপনি উৎসাহ পাবেন। শুরুতে হয়তো আপনি পছন্দের একটি গ্যাজেট কেনার জন্য টাকা জমাতে পারেন। তারপরে আপনার টাকা জমানোর অভ্যাস হয়ে গেলে সে আস্তে বড় লক্ষ্যের দিকে অগ্রসর হন।
বাজেট করা কেন গুরুত্বপূর্ণ?
আপনার টাকা খরচ করার আগে টাকা খরচের জন্য একটি নীল নকশা করে নেয়া ভালো। অন্যদিকে আপনি যেসব ক্ষেত্রে বেশি টাকা খরচ করেন সেগুলো হিসাব রাখুন। আপনি আপনার ফরজ গুলো লিখে রেখে সপ্তাহ বা মাসের শেষে হিসেব করে দেখতে পারেন যে আপনি আপনার যে পরিমাণ টাকা খরচ করতে চেয়ে ছিলেন তার মধ্যে থাকতে পেরেছেন কিনা।
কিভাবে ব্যবহার করতে হয়?
টাকা যদি আমরা ঠিকভাবে গুছিয়ে না রাখতে পারি তবে তা হারিয়ে যেতে পারে। আবার মানিব্যাগে থাকলে তা যেকোনো সময় খরচ হয়ে যেতে পারে। পারেন এর থেকে যদি তাহলে সহসা হারিয়ে যাবে না বা খরচ হয়ে যাবে না। এছাড়াও আপনি অল্প বয়সেই যদি ব্যাংকিং সিস্টেম এর সাথে পরিচিত হন তাহলে আপনার জন্য সুবিধা। হয়তো পরবর্তীতে আপনার কোনো কারণে ঋণ নেওয়ার দরকার হতে পারে, আপনার যদি ব্যাংকিং রেকর্ড ভালো থাকে তাহলে দাও আপনাকে সাহায্য করবে।
শুরু করার আগে, কয়েকটি ব্যাংকের সাথে কথা বলে দেখুন। কোন কোন ব্যাংক হয়তোবা একাউন্টে ন্যূনতম ব্যালেন্স না থাকলে টাকা চার্জ করে।
বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, যারা অল্প বয়সে নিজেদের আর্থিক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করে ভবিষ্যতে তাদের প্রেমের সাগরে ডুবে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক কম। অপরদিকে আর্থিক জ্ঞানের স্বল্পতা ভবিষ্যৎ জীবনে অপরিপক্ক বিনিয়োগ এবং অবসরকালীন সঞ্চয় এর মতো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের বেলায় অনেক বড় ধরণের সমস্যা নিয়ে আসতে পারে।