সশস্ত্র বাহিনী নিষ্ঠা ও শৃঙ্খলার প্রতিচ্ছবি। আপনি কিভাবে তাদের সেই মূল্যবোধগুলি দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে আপনার ব্যক্তিগত আর্থিক উন্নয়নে কাজে লাগাতে পারেন সে বিষয়ে এই আর্টিকেলে বলব।
এটা বলার কোনও অপেক্ষা রাখে না যে আমাদের সশস্ত্র বাহিনী আমাদের জাতীয় সুরক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। মানসিক এবং শারীরিক শক্তি অর্জনের জন্য তারা যেভাবে তাদের জীবন এবং অভ্যাসকে পরিবর্তন করে তা সত্যি অনুপ্রেরণার উৎস। তারা সহজ জীবন ত্যাগ করে, প্রিয় মানুষদের থেকে দিনের পর দিন দূরে থেকে কঠোর পরিশ্রম করে যাতে দেশ শান্তিতে থাকে।
আপনি কি জানতেন, যে আপনি সশস্ত্র বাহিনীর এই অনুপ্রেরণাকে কাজে লাগিয়ে আপনার ব্যক্তিগত আর্থিক অভ্যাসকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করতে পারেন? পড়তে থাকুন!
টাকা পয়সার ব্যাপারে নজরদারি বাড়ান
সশস্ত্রবাহিনীর একটা বৈশিষ্ট্য হলো তারা জলে, স্থলে ও আকাশ পথে সবসময় নজরদারি করে। কখন কোন দিক থেকে শত্রুর আক্রমণ করবে সেই বিষয়ে আগে থেকে কিছু বলা যায় না। একমাত্র সবসময় নজরদারি করেই তারা কোনও বিষয়ের জন্যে প্রস্তুতি নিতে পারবে।
আমরা আমাদের অর্থ পরিচালনার পদ্ধতিতে এই বৈশিষ্ট্যটি প্রয়োগ করতে পারি। কিভাবে? প্রতিটি পয়সা কোথায় ব্যয় হচ্ছে এবং প্রতিটি ব্যয় আমাদের জীবনে কোনও মূল্য যোগ করছে কিনা তা জানা দরকার।
একটি শক্ত রুটিনের মধ্যে নিজেকে নিয়ে আসুন
একটি নির্দিষ্ট সময় আপনার ক্রেডিট কার্ডের বিল, অন্য কোনো ঋণ থাকলে তা টাকা পরিশোধ, অথবা কোন ইএমআই থাকলে তা পরিশোধ করুন। এটি হতে পারে মাসের একটি নির্দিষ্ট সময়ে প্রত্যেক সপ্তাহের একটি নির্দিষ্ট দিনে আপনি নিয়মিত আপনার ঋণ শোধ করার ব্যাপারটি পর্যবেক্ষণ করুন। আপনার আপনার প্রয়োজনের টাকায় যেন ঘাটতি না হয় তার জন্য আগে থেকেই পরিকল্পনা করুন। আপনিও হয়ত ভাবতে পারেন যে, এই ছোট ছোট বিষয়গুলিতে নজর না দিলে তেমন কোনও সমস্যা হবে না। কিন্তু আপনি যদি নিয়মিত নজরদারি না করেন, তাহলে ছোট বিষয়গুলি একসময় আপনাকে বড় বিপদের সম্মুখীন করতে পারে।
কোনও কিছুই সহজ না – ভাল ফলাফলের জন্যে পরিশ্রম করতে হবে
আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা যুদ্ধ করা ছাড়াও সব সময় পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। যুদ্ধ থাকুক বা না থাকুক তাদের ট্রেনিং কখনো বন্ধ হয় না। এমনকি সশস্ত্র বাহিনীতে যোগদানের আগে প্রত্যেক ক্যান্ডিডেট কে তাদের শারীরিক, মানসিক এবং মনস্তাত্ত্বিক কঠিন পরীক্ষা দিতে হয়। এখান থেকে আমরা যে শিক্ষা নিতে পারি তা হচ্ছে – সাফল্য আসলে খুব সহজে আসে না এর জন্য প্রচন্ড পরিশ্রম করতে হয়।
একইভাবে আপনি যদি আপনার অর্থনৈতিক সাফল্য চান, তাহলে শুধু চিন্তা করে বসে থাকলেই হবে না সাথে সাথে আপনাকে কঠোর পরিশ্রম করে এগিয়ে যেতে হবে।
সাহস ও আত্মবিশ্বাস
সশস্ত্রবাহিনীর সদস্যরা যুদ্ধক্ষেত্রে যে রকম সাহসী থাকেন একই হবে তারা নিজের উপরে বিশ্বাস রেখে সামনের দিকে এগিয়ে যান। আপনার অর্থনৈতিক সাফল্য অর্জন করতে হলে আপনাকে অবশ্যই ঝুঁকি নেওয়ার সাহস রাখতে হবে। এবং নিজেকে বিশ্বাস করতে হবে যে আপনিও আপনার অর্থনীতি লক্ষ্য অর্জন করতে সক্ষম হবেন। অবশ্যই প্রয়োজনে আপনি অর্থনৈতিক উপদেষ্টার সাহায্য নিতে পারেন।
সঠিক পরিকল্পনা ও কৌশল
যুদ্ধের প্রতিটি পদে-পদে মৃত্যু ওঁৎ পেতে থাকে। তাই সেনাবাহিনীর প্রত্যেকটি মিশনেই তাদেরকে খুব ভালোভাবে পরিকল্পনা এবং কৌশল করে কাজে নামতে হয়।
একইভাবে আমরা যদি আমাদের অর্থনৈতিক লক্ষ্যগুলো অর্জন করার জন্য সঠিক পরিকল্পনা এবং সুস্পষ্ট কৌশল ঠিক করে কাজ করি তাহলে আমাদের লক্ষ্য অর্জন অনেক সহজ হবে।
লক্ষ্য নির্ধারণ করে এগিয়ে যাওয়া
সেনাবাহিনীর সশস্ত্র বাহিনীর প্রত্যেকটি মিশনের একটি লক্ষ্য থাকে। তাদের মিশন শুরু করার সময় থেকে মিশন শেষ করা পর্যন্ত তারা সবসময় সে লক্ষ্য অর্জনের জন্য লড়াই করা যায়। এবং মিশন সম্পন্ন হওয়ার আগ পর্যন্ত তারা কোনো অবস্থাতেই হাল ছাড়ে না।
আপনি যদি আপনার অর্থনৈতিক লক্ষ্য এখনও ঠিক করে না থাকেন, তাহলে এখনি সময় আপনার অর্থনৈতিক লক্ষ্য গুলো ঠিক করে নেয়া। এবং লক্ষ্য অর্জনের জন্য একটি সঠিক পরিকল্পনা করে এগিয়ে যাওয়া উচিত।